বন্ধ ঘরে টিকটিকির ভূত।। লেখা : শ্রীপর্ণা দাস ব্যানার্জী
রিম্পি প্রায় চার মাস পরে ঢুকবে নিজের বাড়িতে। সেই যে মামার বাড়ি গেল মা বাবার সাথে তারপর তো আর ফিরতেই পারল না, করোনার জন্য সব কিছু বন্ধ। মামাতো ভাই বোনের সাথে বেশ কাটছিল সময়। এদিকে বাড়ি ফেরার তাড়াও ছিল বাবা মায়ের, কতদিন আর থাকা যায় এখানে। ফেরার কয়েকদিন আগে রিম্পি শুনতে পেয়েছিল মা বাবা নিজেদের মধ্যে কথা বলছে, “এতদিন ছিলাম না, ঘরের কি অবস্থা কে জানে! এক হাঁটু নোংরা হয়ে থাকবে। কথাটা শুনেই রিম্পির মনে পড়ে গেল ওদের বাড়িতে একটা বিশাল টিকটিকি ছিল। সে বেশির ভাগ সময় ঠাকুর ঘরেই থাকতো, মাঝে মাঝে রান্না ঘর আর শোওয়ার ঘরে উঁকি দিত। সে কি আর বেঁচে আছে? পালিয়ে যেতে পারবে না, জানলা দরজা সব বন্ধ। যদি মরে গিয়ে থাকে তাহলে ওর ভূত নিশ্চয়ই ওদের বাড়িতেই ঘুরছে। কথাটা ভাবতেই ভয়ে শিউরে ওঠে রিম্পি। কাউকে বলতেও পারছে না, মামাতো ভাই বোন জেনে যাবে রিম্পি ভূতে ভয় পায়, তাও আবার টিকটিকির ভূত। কিন্তু কথাটা তো আর হেসে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
অবশেষে মজার দিনগুলো শেষ হল। রিম্পিরা ফিরে এল নিজের বাড়িতে। দরজার তালা খুলতেই রিম্পি বাবার পেছনে লুকিয়ে পড়ল।
“কিরে কি হল?” রিম্পির বাবা জিজ্ঞেস করলে রিম্পি চুপ করে থাকে।
সাহস করে সেদিন ঢুকল ঘরে রিম্পি। সারা ঘর ঘুরেও টিকটিকিটাকে দেখা গেল না। মরে গেছে তাও বলা যাচ্ছে না, মরে গেলে তো কোথাও পড়ে থাকবে, বাজে গন্ধ হবে, সেসব কিছুই হল না। রিম্পির মার ঘর পরিষ্কারও হয়ে গেল, টিকটিকিটাকে আর পাওয়া গেল না। তাহলে কি সুপার পাওয়ারে গায়েব হয়ে গেল? এমন অনেক সিনেমা রিম্পি দেখেছে। সেদিন রাতে খুব ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিল, রিম্পি দেওয়ালে কিসের যেন ছায়া দেখতে পাচ্ছিল। রাতে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখল টিকটিকিটা ওকে বলছে যে সে রান্না ঘরের নর্দমার পাইপ দিয়ে পালিয়ে গেছে, মরে যায়নি। সকালে উঠে সেদিন থেকে রিম্পির ভয়টা চলে গেল, মরে যায়নি মানে ঘরে কোন ভূত নেই। কিন্তু স্বপ্নটা কে দেখাল? সে জানল কি করে রিম্পি ভয় পাচ্ছিল এতদিন?