করোনাসুর দমন

করোনাসুর দমন ।। লেখা : মঞ্জিলা চক্রবর্তী

একবার ধরাধামে এক ভয়ংকর দৈত্য এসে হাজির হল। তাকে খালি চোখে দেখা যায় না। সেই অদৃশ্য দানব মানুষের চোখ নাক মুখ দিয়ে শরীরের ভেতর ঢুকে পড়ে তাকে প্রথমে বন্দি বানিয়ে ফেলে। তারপর তাকে প্রাণে শেষ করে ফেলছিল। শুধু তাই নয়, ওই করোনাক্রান্ত বন্দির সংস্পর্শে যে যাবে সেও করোনাসুরের কবলে পড়বে। সে অসুর এতোই মারাত্মক যে তার দাপটে পৃথিবীবাসী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছিল।একসময় সেই ভয়ংকর করোনাসুর আমাদের দেশে এসেও হাজির হল। রাজামশাই দেশবাসীকে বাঁচানোর উপায় খুজতে লাগলেন। ডেকে পাঠালেন সব মন্ত্রী-শান্ত্রীদের। স্বাস্থ্য মন্ত্রী থেকে পন্ডিত বর্গ… সবার সঙ্গে আলোচনা সেরে রাজামশাই নিদান দিলেন প্রজাগণ আজ থেকে সবাই গৃহবন্দি থাকবে। তাহলে করোনাসুরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু এ কেমন আদেশ। করোনাসুরের হাত থেকে বাঁচলেও গরীব প্রজাগণ তো না খেতে পেয়ে মরবে। তাছাড়া কতদিন এভাবে ভয়ে গৃহে মুখ লুকিয়ে বসে থাকা যাবে!আসলে রাজামশাই কৌশলে একটু সময় নিয়েছিলেন যাতে করোনাসুরকে বন্দী করার উপায় বের করা যায়। কিন্তু সময় বয়ে যাচ্ছিল… আর করোনাসুরও সুযোগ বুঝে দাপটে প্রজাদের নিকেশ করে যাচ্ছিল।রাজামশাই প্রজাদের দৈন্য দশা আর দেখতে পাচ্ছিলেন না। দেশ প্রায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়ার অবস্থা! চিকিৎসকেরা যাঁরা প্রজাদের করোনাসুরের কবল থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন তাঁরাও কেউ কেউ করোনাসুরের হাতে প্রাণ খোয়াচ্ছিলেন।এমন সময় আমাদের দেশে আলোকনগরী থেকে আলো ঝলমল পোশাকে আলোর রথে চড়ে এলেন এক রাজকুমার। তিনি বয়ে আনলেন আলোর বার্তা। তিনি – আলো, বাতাস, জল, পাতাল ও অন্তরীক্ষ থেকে পঞ্চগুণ সম্পন্ন মহৌষধ দিয়ে বানালেন এক রক্ষাকবচ। তা ধীরে ধীরে সমস্ত প্রজাগণকে দেওয়া হল। আর তাদেরকে বাইরে বেরোনোর জন্য কিছু বিধান দিলেন। মুখে মুখোশ, মস্তকে শিরস্ত্রাণ আর হাতে একরকমের আলোক ঔষধি ব্যবহার করতে। যাতে করোনাসুর কাউকে কোনভাবেই বন্দী বানাতে না পারে।প্রজাগণ সমস্ত বিধান মেনেই বাইরে বের হলেন। করোনাসুরও দৌড়ে এসে তাদের আক্রমণ করল। কিন্তু কোনোভাবেই কাউকে আর জব্দ করতে পারল না। তারা যে সব দিক থেকে সুরক্ষিত। শেষে বেচারা করোনাসুর পরাজিত হয়ে ক্ষোভে দুঃখে এদেশ থেকে বিদায় নিল। আর প্রজাগণও বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে আলোকনগরীর আলোক কুমারের জয় জয় করতে থাকল।

Author: admin_plipi