
আমরা নর্থ ইস্ট স্টেট বলতে জানি সেভেন সিস্টার বা পূর্বোত্তরের ৭টি রাজ্য। তবে সরকারি নথিতে এটা ৮ রাজ্য নিয়ে। সিকিম,আসাম ,অরুণাচল, মিজোরাম ,নাগাল্যান্ড ,ত্রিপুরা ও মণিপুর। এদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে।
যেমন অরুণাচল প্রদেশ, সেখানে ২৬+১০০ ট্রাইব ও সাবট্রাইব আছে। আদি, আবর,আঁকা,আপাতানি, দাফ্লা,নিসিং বাঙ্গণী, তাগইন, গালো, খামতি, বুগুন মিশমী,মোম্বা, শেরডুকপেন, সিম্পো প্রভৃতি।
অরুনাচলের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে আপাতানি জনগোষ্ঠী হচ্ছে বৃহৎ জনগোষ্ঠী। এরা দ্যায়নি-পোলোর(চাঁদ এবং সূর্যের)পুজো করে । যেটা সনাতন, প্রাকৃতিক বা আদি সংস্কৃতির একটা অংশবিশেষ।
শুধুমাত্র নাগাদেরই ১৬টা মেইন ট্রাইব ও শতাধিক সাবট্রাইব আছে এবং এদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভাষা আছে যেগুলো পুরোপুরি শব্দসংকেত নির্ভর এবং যার কোন লিপি নেই। এমনকি এক গোষ্ঠী আর এক গোষ্ঠীর ভাষা জানে না। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ভাষা, সাংস্কৃতিক সর্বোপরি স্বার্থ সচেতনতার প্রেক্ষিতে আন্তর্গোষ্ঠী বৈরিতা বজায় রেখে চলছে।
নাগাল্যান্ড যেমন মোস্ট পপুলেটেড খৃষ্টান স্টেট। ঠিক তেমনি পূর্বোত্তরের বাকি রাজ্য গুলোতেও খ্রিস্টানিটির প্রভাব খুব বেশি।বর্তমানে এখানে অধিকাংশই খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পরে নিত্য বা বিশেষ জীবনচর্চায় প্রাচীন সংস্কৃতি প্রায় লুপ্ত হওয়ার দিকে।
সেই প্রাচীন ক্ষয়িষ্ণু লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধার করে, এদের আন্তর জনজাতীয় বৈরিতা বা পরস্পর শত্রু মনোভাবাপন্নতা দূর করে এবং নিজেদের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বাড়ানো ও সৌভাতৃত্তবোধ জাগ্রত করতে, এদের সমস্ত পুরনো সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধার করতে, এদের একে অপরের সাথে বৈরীতা নিরসন করতে, জাতীয় ঐক্যের চেতনাকে জাগ্রত করতে সরকারিভাবে ২০০০ শনে হর্নবিল ফেস্টিভাল এর সূচনা হয়।
১০দিন ব্যাপি এই বৈচিত্র্যময় রাজকীয় অনুষ্ঠানে প্রায় দুইশতকুড়িটার মত জনজাতি গোষ্ঠী তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রদর্শন করে ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। যেমন নাগা চিলি বা ভুত জলোকিয়া খাওয়ার প্রতিযোগিতা, শূকরের চর্বি খাওয়ার প্রতিযোগিতা, নাগা রেসলিং প্রতিযোগিতা, কুংফু প্রতিযোগিতা, মাউন্টেন বাইকিং প্রতিযোগিতা, কার র্যালি ইত্যাদি। সেখানে বিজেতার জন্য আকর্ষণীয় পুরস্কার মূল্য ধার্য থাকে।
কিসামা ভিলেজের একটা পাহাড়ি টিলায় এই মুরাং ও হর্নবিল ফেস্টিভাল এর আয়োজন। নাগাল্যান্ডের বাণিজ্যিক শহর এবং রেইল কানেক্টেড ডিমাপুর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূর হচ্ছে কোহিমা সিটি, সেখান থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে কিসামা ভিলেজ। কিসামা হচ্ছে একটা ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম, সেখানে সংশ্লিষ্ট জনজাতির স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন জনজাতির মুরাং তৈরি করা হয় । মুরাং বলতে যেটা বোঝায়, কোন জনজাতির বিগ হাউস বা লং হাউস বা কমূউনিটি হল্। সেই সব ঘরগুলোতে যারা এই অনুষ্ঠানের পার্টিসিপেন্ট তারা সেখানে অস্থায়ী আস্তানা গাড়ে । এই বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন মুরাংএ তাদের খাদ্য, পোশাকের বিপণন ব্যবস্থা থাকে। অনুষ্ঠান দেখতে এসে মানুষ তাদের বৈচিত্র্যময় খাবারের রসাস্বাদন করতে পারে, যেমন চালের তৈরি পানীয়, শূকরের মাংস, বিনসেদ্ধ, ভাত, রেশমকিট ভাজা ইত্যাদি।
এই ১০ দিনব্যাপী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন , মুন্ড শিকারী নাগা জনজাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দেখতে এবং খাবারের রসাস্বাদন উপরি পাওনা । সত্যি বলতে, মুন্ড শিকারী নাগারাই এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ।
লেখা ও ছবিঃ দেব
Mundu Shikarir Deshe | Dev | Dev | www.pandulipi.net | Travelogue | Bengali
অসাধারণ। এরকম তথ্য সম্বলিত ভ্রমণ কাহিনী মনকে নাড়া দেয়। পরের পর্ব পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলাম। ‘ভবঘুরে’র অ্যাম্বিশন সার্থক হোক।
ধন্যবাদ আপনাদের প্রশ্রয়, আমার অনুপ্রেরণা
Ajanak Jana e gyan. Notun kichhu janlam, lekhok k anurodh erokam janate.
ধন্যবাদ
Bah!! Khoob sundor ekta information pelam Naga jonojati sombondhey. Eder ei cultural program er bapare National Geography baa History channel Dekhano gele whole worlder manush jante parben enader sambondhhey
ধন্যবাদ
অসাধারণ লেখা , পড়ে নর্থ ইস্ট সম্পর্কে ভয়, মিশ্রিত প্রেমে রূপান্তরিত হলো। জীবনে একবার অন্তত যাবার ইচ্ছে রইলো।
ধন্যবাদ
Bhalo laglo.
ধন্যবাদ
Like!! Thank you for publishing this awesome article.
670497 111916Hello. Neat post. There is an issue with your website in firefox, and you may want to test this The browser could be the market chief and a big part of other individuals will miss your amazing writing because of this dilemma. 259857
816004 826950This is a great common sense post. Really useful to one who is just discovering the resouces about this part. It will certainly assist educate me. 414944