প্রতীক্ষা

 

 

জানতাম, সে আসবে। সে এল বিকেল চারটের দিকে। হালকা সবুজ শাড়ির আঁচল উড়ছে বিকেলের হাওয়ায়। একটু ইতস্তত করে এদিক ওদিক দেখে খুব সাবধানে চিঠিটা তুলে দিল আমার হাতে। জানতাম যে, এই চিঠিটা আমাকে লেখা নয়। এটা পৌঁছে দিতে হবে অম্লানের কাছে। এ কাজ আমি হাসিমুখে করে আসছি বিগত তিন বছর ধরে। আমি জানি প্রতিমা হয়ত আমাকে ঠিক ভাবে চেয়েও দেখে না। তবু আমি ওর অপেক্ষায় থাকি। নিজেকে খুব গুরূত্বপূর্ণ মনে হয় প্রতিমার মুখের দিকে  তাকালে। অন্যের চিঠি খুলে পড়ার এক অদ্ভুত  আনন্দ আছে। অম্লানকে দেবার আগে আমি যখন মাঝরাতে প্রতিমার চিঠি পড়তাম তখন খুব খুব ভাল লাগত। অবশ্য শেষ অব্দি এত সুন্দরভাবে অম্লানের হাতে পৌঁছাত যে, ও কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি যে আমি ওকে লেখা চিঠি পড়ে নিয়েছি। তবে এবারের অপেক্ষাটা অনেক দীর্ঘ। প্রায় বাইশ বছর হয়ে গেল। কোনও চিঠি আসেনি। প্রতিমা কেন, আর কেউই চিঠি নিয়ে আমার কাছে আসে না। রাতগুলো আর কাটতে চায় না। লুকিয়ে লুকিয়ে জীবনের গল্পগুলো পড়তে না পেরে আমি একা হয়ে গেছি আজ। আমার নিজের  তো কোন গল্প নেই। আমার জীবনের গল্পগুলো মানুষের জীবন থেকে উঠে আসত। অন্তঃসারশূণ্য এক কঙ্কালের মত তবু আজও আমি অপেক্ষায় থাকি। কোনও নতুন চিঠির আশায় নয়।
কিলো দরে পুরোন লোহার দোকানে বিক্রি হয়ে যাবার আশায়।

 

লেখাঃ প্রদীপ্তময়

ছবিঃ কৌশিক

 

Pratiksha     |     Pradiptamoy     |     Kaushik    |     www.pandulipi.net     |     Abstract Concepts     |      Bengali     |     Story   |   Bengali Love Story

Author: admin_plipi