কেউ কেউ ফেরে না
লেখা – দেবাঞ্জন বাগচী
প্রচ্ছদ – নিকোলাস
কাঁচের টেবিলে উপচে পড়া কয়েক বিন্দু জল,
রাঙিয়ে নিয়েছে নিজেদের গোধূলি-মেঘের ছেড়ে যাওয়া লাল রং দিয়ে।
সোফার সামনে পড়ে অ্যাশট্রে, সিগারেটের প্যাকেট আর
একটি খালি কফির কাপ।
জমেছে তাদের সন্ধের রঁদেভু।
অবশিষ্ট কফি পেয়ালাতেই শুকিয়েছে,
তিনদিন আগের সকালে।
কফির কালচে রং যেন প্রথম স্বপ্নভঙ্গের মতন
সাদা পেয়ালার অন্তঃস্থল কুরে কুরে খাচ্ছে।
সিগারেটের সাদা কাগজের পবিত্রতা গ্রাস করছে
টোব্যাকোর বাদামী রং।
আজ, এই ঘরে কেউ নেই।
ফুলদানিতে এক গোছা প্লাস্টিকের ফুল,
পুরোনো পর্দা থেকে খুলে আসা কিছু বাহারি সুতো
আর, রবিবারের কিছু না পড়া খবর
উড়ছে এলোমেলো হাওয়ায়।
ফুলদানির মন নিয়ে গেছে একগোছা গ্ল্যাডিওলাস,
পর্দায় আটকে জন্মদিনের স্মৃতি, আর বেলুনের দাগ।
রবিবার সকালের অযত্নে পড়ে থাকা কাগজ
একদিন ছিল দিনের প্রথম ঝগড়ার বিষয়।
এসবের পর অলস দুপুরে, আদিগন্ত এক ধানক্ষেত আর
দেশ-বদলের স্মৃতি,
কিছুদিন বিশ্রাম পেয়েছিল এই সোফায়।
দমকা বাতাসে কেটে যায় ঘুড়ি,
একদিন বিশ্রামও সাবধান হয়।
কিছু আলাপ জমে ওঠে শেষ অংকের কথা ভুলে,
কিছু খবর কাগজ থেকে পড়ে গিয়েও, টেবিলেই রয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের মেঘের কিছু টুকরো,
মনখারাপের ঘরেই বাসা বেঁধে রয়ে যায়।
কিছু ধানক্ষেতের স্মৃতি এসেও ফিরে যায় ব্যালকনি থেকে,
কিছু ব্যালকনিতে বসেও, খালি ফেলে আসা ঘরই দেখা যায়।
ঘর থেকে বেরিয়েও,
কেউ কেউ আর ফিরে আসে না।