যদি এমন হতো ।। লেখা : প্রমিতা মান্না
-“রোহান, রোহান। উঠ! উঠ! সকাল হয়ে গেছে পড়তে বসতে হবে তো নাকি!” রোহান পড়াশোনা খেলাধূলা সবেতেই খুব ভালো। একদিন রোহান দুপুরে স্বপ্ন দেখে সে তার তিনটে হাত দিয়ে অংক করছে, হঠাৎ মা ডাকায় রোহানের স্বপ্ন ভেঙে যায়, সে মাকে বলে স্বপ্নের কথা, মা তো হেসেই উড়িয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পরে রোহান পড়তে বসে দেখে তার সব অংক খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে আর ঠিকও হচ্ছে। রোহান মনে মনে ভাবে তাহলে আমি ঠিকই দেখেছি, আমার একটি অদৃশ্য হাত আছে, তাইতো অংকগুলো তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো। রোহানের ইতিহাস পড়তে একটুও ভালো লাগতো না, সবসময় বলতো “আমার যদি তিনটে হাতের মতো পাঁচটে মাথা থাকতো তাহলে সব মাথায় অল্প অল্প করে পড়া মুখস্ত করে রেখে দিতাম।” রোহানের মা শুনে খুব হাসল, সে ভাবেওনি যে ছেলের মাথায় এমনও ভাবনা আসবে! আবারো সেদিন রাতে সে স্বপ্ন দেখে তার পাঁচটা মাথায় ইতিহাস মুখস্ত করে রেখেছে, মা যেখান থেকেই প্রশ্ন করুক না কেন সব পেরে যাচ্ছে। সকাল হতেই আগে ইতিহাস নিয়ে পড়তে বসে, মায়ের সব প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে। রোহান হাসতে হাসতে বলে, “কি মজা! কি মজা! আমার তিনটে হাত আর পাঁচটা মাথা।”
-এখন রোহান আর পড়াশোনা নিয়ে ভাবেই না, পড়াশোনা মনে রাখার চেষ্টাও করে না। সে ভেবেই নিয়েছে তাঁর পাঁচটা মাথা, তিনটে হাত দিয়েই সব সাবজেক্টে পাস করে যাবে। আজ রোহান এর পরীক্ষা, সে দিব্যি আছে, একবারও বই খোলেনি, মা বললেও মাকে বলেছে সে সব পারবে। সেদিন পরীক্ষায় রোহান প্রায় কিছুই না পারায় সে বুঝতে পারে আর এসে মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আমি আবার আগের মত পড়াশোনা করবো।” মা তখন রোহানকে বলে, “পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দিতে নেই, যে যতই জানুক সেটার চর্চা চালিয়ে যেতে হয় না হলে সেটা হারিয়ে যায়, কোনো কিছুতে পারদর্শী হলেও অহংকার করতে নেই, বরং শেখার চেষ্টা করে যেতে হয় আজীবন।”