এই ভোর বেলায় জগিং করতে বের হয়েছি। ঘুরতে ঘুরতে দূরে নৌকাঘাটের পাশে যে কলোনীটা রয়েছে, সেখান থেকে মৃদু গানের শব্দ ভেসে এলো। আসলে গান তো বাজতেই থাকে, কান পাতা হয়ে ওঠে না। আজ একটু কান পেতে শুনলাম। জীবন টাকে রিলেট করলাম লাইনদুটোর সাথে। মিল পাচ্ছি, আলবাৎ পাচ্ছি। আজকাল খুব মনে হয়, জীবনটা গান থেকে উঠে আসলে ভালো হতো। আগে তো গান জীবন থেকে উঠে আসতো। একদা জিয়ন্ত জীবনটা যদি ওই গান হতে পারতো!
গাছের মগডালে একটা দাঁড়কাক মিচকি হেসে উড়ে গেল। ওর ব্যঙ্গ করা সাজে। একটা বেঞ্চে এসে বসলাম। কুয়াশা কেটে রোদ ওঠার অপেক্ষায় আছি। রোজ তাই থাকি। রোজ রোদ ওঠেনা।
পাহাড়ের বৃষ্টিতে মহানন্দায় জল এসেছে, শ্যাওলা গুলো ধুয়ে নিয়ে সে এগিয়ে চলেছে। আজকাল আর প্রায় পারেই না। একটু ওর পাশে বসে দুটো সুখ দুঃখের কথা জিগেস করলেই হাঁড়ি পেতে বসবে। হয়তো হালকা হতো ওর মনটা! কেউ করে না। ও বোধ হয় আশাও করে না আর। ঘরকুনো গিন্নির ধাঁচে হালকা আঘাতে অভিযোগ অনেক আগেই ও ভুলে গেছে। কাকে জানাবে? জলটা ঘোলা, স্বচ্ছতার অভাব সবখানেই। গতকাল রাতে যারা সুলেখার ইজ্জতে হাত দিতে এসেছিল, তারা আজ গাছতলায় বসে তাস পেটাচ্ছে, পাশে দুটো বাংলা মদের বোতল। একটি খালি হয়েছে। খালি হয়েছে মানবিকতাও।
তবু বৃষ্টি নামবে, আকাশে চাঁদ উঠবে, মাঠে ফসল ফলবে সবার জন্য। ওই অমানুষ গুলোর জন্যও।
গানটা এখনো বাজছে, “সেই যে নীলের নেশা লাগিয়ে দিয়েছ মনে, আমার জীবনে, আর সে নীলকে ভুলবার নয়..”
লেখাঃ সুপ্রাতিম
ছবিঃ দেব
Dekho Manoshi | Supratim | Deb | www.pandulipi.net | Abstract Concepts | Emotional | Bengali | Poem