
শঙ্খ যে মাঝে মাঝে নীলাকে বলে না, “তুমি মেয়েটা ভালো, তবে মাথার ভিতর রেমন্ডের ছিট রয়েছে”- কথাটা হয়তো ঠিকই। কর্পোরেট হাউসে দায়িত্বপূর্ণ পদে কাজ করা শঙ্খ যখন নীলার জন্য খুব কষ্ট করেই সময় বের করে, একসাথে কিছুটা সময় দু’জনে দু’জনার মধ্যে হারিয়ে যাবে বলে, তখন নাহলে কি আর পাগলামি করে নীলা সব বানচাল করে দেয়।
এই তো সেদিন, তড়িঘড়ি অফিস থেকে কোনমতে বিকেল চারটের দিকে বেরিয়ে নীলাকে ফোন করে জানালো দুজনে ময়দান চত্বরে বেড়াতে যাবে। পাঁচটার মধ্যে যেন সে পৌঁছে যায় যেখানে ওরা একসাথে হলে দেখা করে থাকে। এল নীলা, দু’জনে প্রবেশ ও করল। শঙ্খ ভেবেছিল সন্ধ্যার আলো-আঁধারি স্বপ্নালু পরিবেশে নীলাকে পাশে নিয়ে হাঁটবে, মৃদুস্বরে কিছু অস্পষ্ট কথাবার্তা বলবে যা নীলাকে আরও আদুরে করে তুলবে, কখনো বা আড়চোখে দেখবে নীলার দু হাতের অস্থিরভাবে আঙুল খুঁটে চলা, হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত বোধ করলে নীলার নরম কোলে মাথা রেখে ওর কথা বলা চোখ দুটিতে নিজেকে দেখতে পাওয়া। ওর চোখের তারায় শঙ্খ অনন্তকালের জন্য হারিয়ে যেতে পারে। আবেশঘন সন্ধ্যাটাকে স্মৃতির ফ্রেমে আটকে রাখবে বলে অনেক কাজের মধ্যেও শঙ্খ একটু সময় বের করে নিয়েছিল। কিন্তু মেয়েটা বোঝে, নাকি বোঝে না ভালোবাসার অর্থটা কি? এমন এক বর্ণে-গন্ধে ভরপুর সন্ধ্যাবেলা মনও যেন ওর ইচ্ছেকে সাথ দিতেই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু মেয়েটা এমন সব প্রশ্ন করে বসে হঠাৎ যে ওর কপালে কয়েকটা সেকেন্ড ব্র্যাকেট অজান্তেই আঁকা হয়ে যায়।
হাঁটতে হাঁটতে ওরা যখন এক কোণে এসে বসল, নীলার কোলে মাথা রাখতে গিয়েছে কি অমনি হঠাৎ বলে উঠল নীলা, “অক্টোপাস!” শুনেই আচমকা খাবি খেয়ে উঠে বসল শঙ্খ, বলল “কি পাস?”
-“দিঘার বালিয়াড়িতে নাকি অক্টোপাস দেখা গেছে!”
-“তো? হঠাৎ আমাদের কথার মধ্যে অক্টোপাস এল কোথা থেকে?”
-“তুমি না কেমন যেন কথা বল সব শঙ্খ।” আহ্লাদি সুরে অভিযোগ করে নীলা। “বেচারা জল থেকে উঠে এসেছে, খাবে কি এখন?”
-“মানে! এখন আমারই তো খিদে পাচ্ছে। নিজের চিন্তা ছেড়ে ভাবতে হবে অক্টোপাস কি খাবে?…নীলা তুমি কি ছেলেমানুষি করার সময় পাও না?”
-“বলো না গো অক্টোপাস কি খায়?”
কিছুটা রসিকতায়, কিছুটা হা-হুতাশের সুরে শঙ্খ বলে, “অক্টোপাস কি খায় পরে জানাব।”
আশ্চর্য হয়ে নীলা বলে, “পরে!”
-“হ্যাঁ। পরে জানাবো।”
কিন্তু নীলা ছাড়বার পাত্রী নয়। শঙ্খ’র হাত ধরে কাছে ঘেঁষে বলবার জন্য জেদ ধরে বসল। উপায় না দেখে শঙ্খ বলল, “আমি কি খেতে চাই তা তো জানার সময় হচ্ছে না। অক্টোপাস কি খায় তাও সঠিক জানা নেই। তবে অক্টোপাসের জায়গায় তুমি যদি হতে তাহলে একটা অনুমান করে উত্তর দিতে পারি। সেটা হল- অক্টোপাস মাথা খায় কি?”
নীলা আদুরে স্বরে বলল, “শঙ্খ, তুমি না কি সুন্দর করে কথা বলো। প্রশ্নও করেছ আবার উত্তর ও দিয়েছ। আবার প্রচ্ছন্নে কি সুন্দর ভাবনার বিষয়ও দিয়েছ। হয়তো মাথা খায়, অথবা খায়না। এটা গবেষণা করে বের করতে হবে।”
-“আচ্ছা নীলা, এত কথা বলার এনার্জি তোমার আসে কোত্থেকে?” বলে শঙ্খ নীলার মুখটা কেবল দুহাতে তুলে ধরে বলতে গিয়েছে সোহাগ ভরে, “কোন চাঁদকে দেখি, দূর আকাশে যে রয়েছে তাকে, নাকি আমার হাতে ধরা এই চাঁদকে যে আমার জীবনে আলো ছড়াচ্ছে তাকে?”
এমনি ভাবে আবেগে আচ্ছন্ন হতে যেতেই নীলার আবার আলগা ধমক- “এই যাঃ! মনে করিয়ে দাওনি কেন?” দ্বিতীয়বার চমকে উঠে শঙ্খ নীরব চোখে প্রশ্ন এঁকে তাকিয়ে থাকে নীলার মুখের দিকে। নীলা ভাবলেশহীন চোখে শঙ্খ’র মুখের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, “নাকে ফোড়া হয়েছে, বলনি কেন এতক্ষণ!” নিজের নাকে ফোড়া হয়েছে কি না তা শঙ্খ নিজেই জানেনা। অজান্তে নাকে হাতটা চলে যায়। নীলা অমনি বলে ওঠে, “তোমার নাক দেখছ কেন! ফোড়া তো হয়েছিল আমার নাকে! মুখটা যেভাবে দুহাতে তুলে ধরেছিলে যদি হঠাৎ নাকে লেগে যেত। তাই মনে পড়ে গেল।” হতাশ হয়ে শঙ্খ উঠে পড়ল নীলার পাশ থেকে। এত কাজের মধ্যেও একটু সময় এসেছিল নীলার সান্নিধ্য পাবে বলে, একান্ত নিজের করে পাবে বলে। কিন্তু এমন অদ্ভুত আচরণ করে নীলা এই রকম একান্ত সময়গুলোতে।
আকাশের চাঁদকে ঢেকে দিয়ে গুমোট কালো মেঘ কখন যেন ঘনিয়ে উঠেছে লক্ষ্য করেনি এতক্ষণ শঙ্খ। হঠাৎ নীলা ওর হাতটা ধরে ফেলে গাঢ়ভাবে। ওর টানে পেছন ফিরে উঠে দাঁড়ানো শঙ্খ এক ঝটকায় নীলার মুখোমুখি এসে পড়ে, এতটাই কাছে যে ওর গভীর হয়ে আসা উষ্ণ নিশ্বাস শঙ্খ’র বুকে ঝড় তোলে। সেই মুহূর্তে দূরে কোথাও কড়্ কড়্ কড়াৎ শব্দে জোরে মেঘ ডেকে ওঠে। নীলা সজোরে শঙ্খ’র বুকে আছড়ে পড়ে। শঙ্খও নীলাকে বুকে সজোরে টেনে নেয়। অবিরাম ধারে হঠাৎ বৃষ্টি এসে ওদের সব কথাকে থামিয়ে দেয়। বৃষ্টির শব্দ আর নীলার ভেসে যাওয়া কথা শঙ্খ’র শরীরে-মনে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় যেন।
কলমে – দেবশ্রী
ছবি – নিকোলাস
ভালো লাগলো
Darun
83082 593855I discovered your site web site online and check many of your early posts. Keep on the top notch operate. I just now additional your Feed to my MSN News Reader. Looking for forward to reading significantly more from you obtaining out later on! 262052
399851 970589Real instructive and great anatomical structure of articles , now thats user pleasant (:. 841863
60594 564778Excellent post, thank you so considerably for sharing. Do you happen to have an RSS feed I can subscribe to? 832747
Like!! Great article post.Really thank you! Really Cool.
37008 756182Nice weblog here! after reading, i decide to buy a sleeping bag ASAP 210945
620661 709783A really exciting go by way of, I may not agree completely, but you do make some really legitimate factors. 173108
475852 350946I gotta bookmark this internet site it seems quite beneficial . 738865
923612 565803Intriguing post. Positive that Ill come back here. Good function. 693309