স্বপ্ন বিহার || কলমে: সাগর চৌধুরী
হঠাৎ দেখা সেদিন। তবে শহরের সাজানো রাস্তার ধারে নয়,
প্রত্যন্ত এক পদ্ম পুকুর পাড়ে।
বৃষ্টিভেজা ধুলির গন্ধ মেখে আমি চলেছি গ্রাম হতে গ্রামান্তরে।
হঠাৎ তোমার সুরভি মাখা উপস্থিতি ঠাঁই পেল মোর কিংশুক হৃদয়ে।
তৃষ্ণার্ত নয়ন অনুভব করল তোমার স্নিগ্ধ উপস্থিতি।
কৃষ্ণ পরিচ্ছদে হলুদ ওড়নায় বসন্ত মেখে তুমি এক ব্যাকুল চিত্তের সম্মুখীন।
“কেন ছেড়ে গেলে?”এই প্রথম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম তোমার ভাবনার ঘরে।
নির্বাক তুমি শুধু প্রাক্তন আদলে পায়ে পা মিলিয়ে চললে আমার তরে।
কত স্মৃতি কত গল্প বলে গেলাম আমি অস্থির মনে তোমার পানে চেয়ে।
নির্বাক তুমি শুধু প্রাক্তন আদলে চললে আগামীর দিকে ধেয়ে।
ভাবছি আমি, এত কিছুর পরেও মন কেন শুধু তোমার চিন্তায় ছোটে?
দেখি তখনই পদ্মবিলের পদ্মগুলো উঠল বলে- “তুই বড্ড বোকা বটে।”
আকাশে জমল আবার কালো মেঘের অশেষ সারি।
সব কথা, সব আশা ভেঙে নেমে এলো তীব্র বর্ষার অঝোর বারি।
বৃষ্টির ধারা গায়ে মেখে নির্বাক দুজন চলেছি নিশ্চুপ কথা বলে।
হঠাৎ দেখি চাইলে তুমি চোখের পানে অনেক কথা বলার ছলে।
বেহায়া আমি উঠলাম বলে- “বলে ফেলো যা বলতে চাও।”
সিক্ত অধরে বললে তুমি- “আমার ভাবনা ভাবা ছেড়ে দাও।”
আকাশ তখন আরও গাঢ় অন্ধকারে করেছে স্নান।
বর্ষণ ধারায় অস্তমিত চোখ আমার প্রায় ম্লান।
তাকে বলব বলে- “বলার আছে অনেক কথা চললে তুমি কোথায়?”
চোখ খুলেছি যখন, দেখি ভোরের আলো স্বপ্নের কালো মেঘেদের দিয়েছে বিদায়।
আমি তো আমার শয্যায়, কোথায় বা পদ্মপুকুর কোথায় বা তোমার উপস্থিতি আর?
সম্বিৎ পেয়ে বুঝলাম ক্ষণে হয়েছে আজ তোমার সঙ্গে আমার শ্রাবণী স্বপ্ন বিহার।