
ছেলেটা কেঁদেই চলেছে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে। পাশে এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ। কিছুক্ষণ আগেই রাস্তা পার হতে গিয়ে একটা বেপরোয়া চার চাকার ছোট গাড়ি ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেছে। ছেলেটা পেছনে ছিল বলে বরাত জোরে বেঁচে গেছে। বৃদ্ধা গোঙাতে গোঙাতে ওখানেই পড়ে রইলো। চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে ছেলেটা
আশেপাশের কয়েকজনকে বলল…”আমার দিদাকে কেউ একটু হাসপাতালে পৌঁছে
দাও গো, আমার কেউ নেই।”
কিন্তু কেউ দাঁড়ালো না। পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। সবাই এই সকাল থেকেই কত ব্যস্ত ! কারো দিকে তাকানোর কোন সময় নেই। আর তাছাড়া এই উটকো ঝামেলায় কে জড়াতে চায়? একসময় বৃদ্ধার গোঙানি থেমে গেল, নিথর হয়ে পড়লো সে। কিছুক্ষণ বাদে কর্তব্যরত পুলিশের কাছে কেউ একজন খবর দিলে একটা অ্যাম্বুলেন্স এসে বৃদ্ধার নিথর দেহ পিজিতে নিয়ে যাওয়া হল। ডাক্তাররা বৃদ্ধাকে মৃত ঘোষিত করলেন আর বৃদ্ধার মৃতদেহ আর অন্যান্য বেওয়ারিশ লাশের মত পড়ে রইল পিজির মর্গে।
ছেলেটা তখনও কেঁদে যাচ্ছে রাস্তার ধারে। ওকে হসপিটালেও নিয়ে যাওয়া হয় নি সঙ্গে। কোথায় যাবে কি করবে বুঝতে না পেরে ওর পোটলাটা জড়িয়ে ধরে ওখানেই দাঁড়িয়ে কেঁদে যাচ্ছিল আর ভাবছিল এই পৃথিবীতে আপনজন বলে আর কেউ রইলো না ওর।আর কেউ ওকে আদর করে “মান্তু ” বলে ডাকবে না কোনোদিন। পাগলী মা তো সেই কবেই ছেড়ে কোথায় চলে গেছে, আর বাবার কথা কোনোদিন সে শোনেই নি। আজ একদম একা হয়ে গেল সে ! চোখের জল কিছুতেই বাঁধ মানছে না….।
তখন সকাল সাড়ে ছয়টা বাজে। রাসবিহারী মোড়ের কাছে চায়ের দোকানটা খুলতে গিয়ে সন্তোষ দেখল একটা ছেলে কেঁদেই চলেছে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে। নয় দশ বছর বয়েস হবে। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেল ছেলেটার কাছে, জানতে চাইলো কি হয়েছে। সব বৃত্তান্ত জেনে সন্তোষ জানতে চাইলো,
-বাড়ি কোথায়?
-বাড়ি নেই গো কাকু। দিদার সাথে থাকতাম, চেতলার কাছেই রাস্তার ধারে একটা বড় তিনতলা বাড়ির শেডের নিচে থাকতাম। কিন্তু কাল কিছু লোকজন এসে ওখান থেকে তাড়িয়ে দিল। বলল, ওখানে আর থাকা যাবে না।ওখানে নাকি বড় একটা শপিং মল না কি হবে …
বলেই ছেলেটা আবার কাঁদতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ ভেবে সন্তোষ বলল , “চল, আমার সঙ্গে ”।
ছেলেটাকে নিজের দোকানে নিয়ে এল সন্তোষ। বুঝতে পারলো, কয়েকদিন ঠিকমত খাবার জোটে নি ছেলেটার। জলের জগটা এগিয়ে দিয়ে মুখটা ধুইয়ে দিয়ে স্নেহময় দাদার মত কয়েকটা বিস্কুট আর একটা কেক খেতে দিল ছেলেটাকে। ছেলেটাকে দেখে নিজের পুরনো দিনের কথা মনে পড়ছিল সন্তোষের। মাতাল বাবা একদিন মারধোর করে ওদের দুই ভাই আর মা’কে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। তখন ওদেরও ঠাঁই হয়েছিল রাস্তার ধারে। কতদিন বৃষ্টিতে ভিজেছে, শীতে কেঁপেছে। তার কোন হিসেব নেই। ভিক্ষা করে, এর ওর এঁটো খাবার খেয়ে, আবার কখনো দু’তিনদিন না খেয়ে কাটিয়েছে। ধীরে ধীরে মা ও দুই ভাই মিলে দোকানে বাসন মাজার কাজ জুটিয়ে নিলে কোন রকমে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের কাছে একটা ঘিঞ্জি বস্তিতে একটা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে ওরা। তারপর আস্তে আস্তে নিজের একটা চায়ের দোকান দিতে পেরেছে সন্তোষ বছর তিনেক হল, ছোটো ভাইটা হোটেলে কাজ করে।
সন্তোষ ভাবে , কলকাতা শহরে কত উঁচু উঁচু বিল্ডিং, কত শপিং মল … অথচ ওদের মত ‘দিন আনি দিন খাই’ লোকেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। কেউ থাকে ফুটপাথে, কেউ ষ্টেশনে, কেউ বা বস্তিতে ঠাসাঠাসি করে গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। ওদের জন্য আচ্ছে দিন বা নির্মল বাংলা কোনটাই নয়।
সন্তোষের চমক ভাঙল ছেলেটার ডাকে,
-আমি এবার যাই?
-কোথায় যাবি পাগল? তুই এখানেই থাক। আমার সঙ্গে।
-সত্যি বলছো?
– হ্যাঁ রে! সত্যি বলছি।
সন্তোষকে জড়িয়ে ধরে মান্তু। দু’জনেরই চোখে জল। একজনের চোখে নতুন আশ্রয় পাবার আনন্দাশ্রু, আর আরেকজনের চোখে দ্বিতীয় সন্তোষের জন্ম আটকাতে পারার তৃপ্তি ..
লেখাঃ মুক্তা
ছবিঃ অভিজিৎ
Ashroy | Mukta | Abhijit | https://pandulipi.net | Emotional | Bengali | Kids | Story
খুব ভালো লাগলো
ধন্যবাদ …
ভাল লেখা ।
ধন্যবাদ …
সুন্দর গল্প, আর নতুন ভোরের অপেক্ষায় সন্তোষ আর মান্তুর অপূর্ব আলোকচিত্রটির প্রয়োগ যথাযথ।
ধন্যবাদ ফিডব্যাকের জন্য ।
ধন্যবাদ টিম পাণ্ডুলিপি । প্রচ্ছদের ফটোগ্রাফি অপূর্ব ।
Asadharan , chhotto lekha kintu kato bhalo. Samanya holeo amader manosikata k boost korte sahajya korbe asha rakhi. Dhanyabad Writer o team Pandulopi.
খুব খুশি হলাম পজিটিভ ফিডব্যাক পেয়ে …
Khb valo laglo…
ধন্যবাদ সঙ্গে থাকার জন্য …
অসাধারণ লেখা ও ছবি।
অশেষ ধন্যবাদ ….
খুব ভালো লাগলো ❤️❤️
আন্তরিক ধন্যবাদ …
941607 175294A very informationrmative post and lots of genuinely honest and forthright comments produced! This surely got me thinking a great deal about this issue so cheers a lot for dropping! 860754
540975 114580I like this blog so considerably, saved to my bookmarks . 804619
360622 163738Beneficial information and exceptional design you got here! I want to thank you for sharing your concepts and putting the time into the stuff you publish! Great function! 896723
669923 33976Completely pent subject matter, regards for entropy. 930162
576754 640450I admire your work , regards for all of the valuable blog posts. 372416
Like!! Great article post.Really thank you! Really Cool.
12859 878825Some truly exceptional articles on this internet internet site , regards for contribution. 570466
770072 130520Come across back yard garden unusual periods of ones Are usually Weight reduction and every one one may be important. 1 way state could possibly be substantial squandering by way of the diet. shed weight 938486