টিটোদি ও রহস্যে ঘেরা কার্শিয়ং টুরিস্ট লজ (প্রথম পর্ব)

টিটোদি ও রহস্যে ঘেরা কার্শিয়ং টুরিস্ট লজ (প্রথম পর্ব)

কলমে – সৌরভ সেন

ছবি – রূপম দে এবং কুণাল

“খুব খুশীতেই আছিস মনে হচ্ছে?” নিলু ঘরে ঢুকতেই টিটোদি তাকে প্রশ্নটা করল। নিলুকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে টিটোদি বলে চলল “দুবার পর পর বেল টেপা শুনেই বুঝেছিলাম তুই কোনও সংবাদ দিতে উদগ্রীব, তবে সেটা সুসংবাদ না দুঃসংবাদ বুঝতে পারিনি প্রথমে। এখন তোর চেহারায় উৎফুল্লতা দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে সেটা সুসংবাদই বটে।”
-“আচ্ছা বেশ। তুমি তো ডিটেকটিভ! বলতো কি সুখবর?”
– “সেটা তো বলা খুব শক্ত। তবে এইটুকু বলতে পারি যে তুই কোন ঠাণ্ডার জায়গায় যাবার প্ল্যান করছিস। তোর পিঠব্যাগের সাইড পকেটে টুপি আর হাতমোজাটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যেগুলো ছাড়া তোকে কখনোই পাহাড়ে যেতে দেখিনি। আর তুই কখনো এত বড় হাত ব্যাগ নিয়েও আসিস না আমার কাছে।”
-“ঠিকই ধরেছ টিটোদি। জম্পেশ খবর আছে। দার্জিলিংয়ে স্নো ফল হচ্ছে! যাবে নাকি একবার?”

বলাই বাহুল্য সুস্মিতা সেন মানে আমাদের গল্পের টিটোদি, তার কি আর সাধ্যি আছে এমন একটা প্রস্তাব সে ফিরিয়ে দেয়! টিটোদি এমনিতেই ভ্রমণপিপাসু। দার্জিলিং আর ডুয়ার্সের প্রতি একটা আলাদাই মোহ রয়েছে তার। অতএব ঠিক হল পরদিন সকালে বেরিয়ে পড়া হবে। রতনকে বলা আছে, ঠিক সকাল আটটায় গাড়ি লাগিয়ে দেবে।

টিটোদি আর নিলু দুজনেই যাদবপুর থেকে সিভিল নিয়ে বি.ই. পাস করেছে। টিটোদি তারপর চাকরি ছেড়ে শখের গোয়েন্দাগিরি করে বেড়ায়। আর নিলু অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, পি.ডব্লউ.ডি. তে। আর সাথে সাথে টিটোদিকে সে বিভিন্ন কাজে হেল্পও করে থাকে। টিটোদি নিলুর দুই ব্যাচ সিনিয়র, অনেক বড়লোক বাড়ির মেয়ে সে। কলকাতায় বাবা-মা থাকে। টিটোদি নিজে শিলিগুড়িতে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকে আর ঘুরে বেড়ায় যেখানে মন চায়। তার সাথে সাথে শখের গোয়েন্দাগিরিও করে বেড়ায়। নিলু থাকে জলপাইগুড়িতে তাই মাঝে মধ্যেই সে চলে আসে টিটোদির কাছে আড্ডা মারতে। টিটোদি যেখানে বেশ স্বাধীনচেতা টমবয় গোছের একটা মেয়ে আর সেখানে নিলু ঠিক ততটাই বিপরীত, নিরীহ গোছের একটি ছেলে। চাল চলনে তফাৎ হলে কি হবে দুজনের মধ্যে মনের মিল প্রচুর।

ক্রিং ক্রিং এলার্ম এর শব্দে পরদিন সকালে যখন ঘুম ভাঙল নিলুর তখন সকাল ছয়টা বেজে দশ মিনিট। বেশ জমকালো শীত পড়েছে শিলিগুড়িতে। গায়ে দুটো কম্বল নিচে ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট, তাতেও মনে হয় শীত মানছে না নিলুর! এই শীতে অলসতা কাটিয়ে বিছানা ছেড়ে ওঠাটাই যে খুব কঠিন কাজ! তবুও অনেক কষ্ট করে বিছানা ছেড়ে উঠে ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে নিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে টিটোদি কে ডাকতে গেল নিলু। কিন্তু কোথায় টিটোদি? বিছানা তো পুরো ফাঁকা! এই সাতসকালে সে গেল কোথায়? দাঁত মাজতে মাজতে নিলু ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ালো। ওমা! এইতো দাঁড়িয়ে টিটোদি। দার্জিলিং টির কাপটা ব্যালকনির রেলিঙের ওপর রাখা। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখতে চায়ের মজা নিচ্ছে টিটোদি। আসলে ব্যালকনি থেকে প্রায় দিনই কাঞ্চনজঙ্ঘা বেশ স্পষ্ট দেখা যায়। শিলিগুড়ি থেকে যে এত ভাল কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যেতে পারে সেটা বোধ হয় অনেকেরই অজানা! কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ আর তার সাথে দার্জিলিং টি ট্রেডার্স থেকে আনা টেমি টির মজাই আলাদা। টেমি কিন্তু দার্জিলিং চা নয়, টেমি আসলে গভমেন্ট অফ সিকিম এর একটি চা বাগান। কিন্তু লোকে যদিও এটাকেও দার্জিলিং চা হিসেবেই চালিয়ে দেয়। তবে টেমি চায়ের কোয়ালিটি অনেক দার্জিলিং চায়ের চেয়েও ঢের বেশি ভাল বলে মনে হয়েছে নিলুর।

লাল রঙের জ্যাকেট আর কালো প্যান্ট পরে আছে টিটোদি। মুখে সকালের হালকা সূর্যের আলো এসে পড়েছে। সূর্যের প্রথম আলোর কিরণে টিটোদির ফর্সা মুখ যেন লালাভ হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে খুব স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে টিটোদিকে। দেখে মনেই হচ্ছে না যে এই মেয়েটা এতোটা ডানপিটে হতে পারে।
-“কিরে ঘুম ভাঙল তোর?” নিলুকে দেখতে পেয়ে টিটোদি জিজ্ঞেস করল।
-“হ্যাঁ তুমি কখন উঠলে টিটোদি?” তার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে একটু লজ্জা পেয়েই নিলু প্রশ্নটা করল।
-“এই তো হবে আধঘণ্টা, নে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে।”
-“ব্রেকফাস্ট করে বেরোবে তো, নাকি?”
-“না না। ব্রেকফাস্ট রাস্তায়। তুই তাড়াতাড়ি স্নানটা সেরে নে।”
-“ব্রেকফাস্ট কোথায় করবে?”
-“পকেটের যা অবস্থা পুরো গড়ের মাঠ। তোর কাছে কিছু আছে নাকি মালকড়ি?”
-“তা আছে হাজার দশেক।”
-“তাহলে চল কার্শিয়ং টুরিস্ট লজ।”
স্নান সেরে ওরা যখন বের হল তখন ঘড়িতে প্রায় আটটা কুড়ি। রতন ঠিক আটটাতেই চলে এসেছিল। ঘরের গিজারটা খারাপ থাকার কারণে ইমারসন হিটার দিয়ে দু’বালতি জল গরম করতে একটু দেরি হয়ে গেছিল ওদের।
তিনবাত্তি মোড় থেকে ওরা বেরিয়ে পড়ল। নিলু ঘড়িটা একবার দেখে নিল, আটটা ত্রিশ হয়ে গেছে।
-“রতন, তুমি রোহিনী হয়ে চলো,” টিটোদি বলে উঠল।
-“ঠিক আছে ম্যাডাম,” হালকা মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল রতন।
-“কি রে নীলু তোর কি খুব খিদে পেয়েছে নাকি?”
– “তা একটু পেয়েছে।”
-“তাহলে কি রাস্তায় মোমো খেয়ে নিবি?”
-“না না! টিটোদি কার্শিয়ং পৌঁছে ভালো কোথাও খাব।”
-“ঠিক আছে, চল প্রথমে হোয়াইট অর্কিডএ ছোলা বাটোরা খেয়ে নিই, তারপর নাহয় টুরিস্ট লজে গিয়ে দার্জিলিং টি খাওয়া যাবে। পুরো ব্রেকফাস্ট টুরিস্ট লজে করতে গেলে পকেট ফাঁকা হয়ে যাবে তোর!”
টিটোদির এই এক সমস্যা। হোয়াইট অর্কিডের ছোলা বাটোরা যে তার খুব প্রিয় সেটা নিলু বেশ ভাল ভাবেই জানে। এর জন্য নিলুর পকেট ফাঁকা হয়ে যাবার দোহাই না দিয়ে সোজাসুজি কথাটা বললেই তো হয়! নিলুর খুব গায়ে লাগে এরকম ভাবে ওর ওপর দোষ চাপালে।

আসলে কার্শিয়ং টুরিস্ট লজও টিটোদির খুবই পছন্দের জায়গা। এই পথে আসলে একবার অন্তত দার্জিলিং টি খাওয়ার জন্য এখানে দাঁড়াবেই সে। তাই এই ভাবে নিলুর পকেট ফাঁকা হয়ে যাবার দোহাই দিয়ে প্রথমে নিজের মন মতো ব্রেকফাস্ট সেরে তারপর টুরিস্ট লজে যাওয়ার ফন্দি এঁটেছে টিটোদি।

গাড়ি চলছে বেশ জোর গতিতে। পাশে সুন্দর ট্রয় ট্রেন অর্থাৎ খেলনা রেললাইন আর একটা স্টিম ইঞ্জিন দেওয়া ট্রয় ট্রেন ওদের পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেল ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে। এবারে টিটোদি র‍্যাপিড ফায়ার রাউন্ড এর মত প্রশ্ন শুরু করল।
-“বল দেখি, কবে প্রথম এই ট্রয় ট্রেন চালু হয়? বল দেখি, কারা এই ট্রয় ট্রেন লাইন নির্মাণ করে?”
কোনও উত্তর না পেয়ে যথারীতি টিটোদি নিজেই সেই ইতিহাস শুরু করল।

ছবি – রূপম

-“শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ের মধ্যে, টাঙ্গা পরিষেবা কার্ট রোডে চলছিল। বর্তমানে তোরা যেটাকে হিল কার্ট রোড বলে জানিস। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের তৎকালীন এক এজেন্ট ফ্রাঙ্কলিন প্রিস্টেজ শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের মধ্যে একটি বাষ্প ইঞ্জিন চালিত ট্রামওয়ে গড়ার প্রস্তাব নিয়ে সরকারের কাছে এসেছিলেন। অ্যাশলি ইডেন, তৎকালীন বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির ইতিবাচক প্রতিবেদনের পর প্রস্তাবটি ১৮৭৯ সালে গৃহীত হয় এবং সেই বছরই নির্মাণ শুরু হয়। গিল্যান্ডারস, অর্বথনোট এবং কোম্পানিকে লাইন নির্মাণের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং ১৮৮০ সালের মধ্যে তিনধারিয়া পর্যন্ত ট্র্যাকটি স্থাপন করা হয়েছিল। দার্জিলিংয়ের প্রথম ভাইসরয় লর্ড লিটন, ট্রেনে করে তিনধারিয়া গিয়েছিলেন। তারপর কোম্পানির নাম পরিবর্তন হয়ে হয়ে যায় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কোম্পানি।”

টিটোদি এত খবর কিভাবে মনে রাখে এটা ভেবেই মাঝে মাঝে নিলু বেশ অবাক হয়ে যায়! সেমিস্টারের আগে প্রয়োজনীয় ফর্মুলাগুলোই ঠিক মত মনে রাখতে পারতো না নিলু। আর এতো জিনিস কি করে মনে রাখবে সে!

নিলু একবার গুগল ম্যাপে দেখে নিল আরও এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট লাগবে। এখন ওরা শুকনা পেরিয়ে গেছে, আর্মি এরিয়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে গাড়ি। দুই ধারে দিগন্ত বিস্তৃত ফরেস্ট আর চা বাগান। এই জায়গাটার বিশেষত্বটাই আলাদা। কম করে একশ বার তো এসেছেই টিটোদি আর নিলু এই রাস্তায়! কিন্তু তবুও কখনো পুরনো হয় না এ জায়গার স্বাদ। এখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে মনের সব দুঃখ কষ্ট এমনি চলে যায়। সবচেয়ে ভালো লাগে রোহিনী ওঠার আগে রাস্তার দু’ধারে সারি সারি ফুল গাছ। আর তাতে খুব সুন্দর ফুলও হয়ে রয়েছে এখন। রতনকে গাড়ি থামানোর ব্যাপারে বলতে যাবে নিলু এমন সময় টিটোদি নিজে থেকেই গাড়ি দাঁড় করাতে বলল।
-“চল নিলু, একটু হেটে যাই।” রতনকে দু’ কিলোমিটার দূরে গিয়ে দাঁড়াতে বলল টিটোদি।
দুজনের মতের হাজারটা অমিল থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই যে বেশ জোরাল মিলও আছে সেটা নিলু বেশ ভালোই বুঝতে পারে। দুই কিলোমিটার হাঁটতে হাঁটতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে গাড়ির কাছে গিয়ে পৌঁছল ওরা। এর আগেও নিলু বহুবার হেঁটেছে এই রাস্তায়। কিন্তু এবার টিটোদির সাথে যেতে যেতে বেশ অন্যরকম একটা অনুভূতি পেল নিলু। প্রায় পঁয়ত্রিশ মিনিট সময় লাগল, ঘড়িটা একবার দেখে নিল নিলু।

ছবি – কুণাল

রতন আবার গাড়ি চালাতে শুরু করে দিয়েছে। এতটা পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে এই ঠাণ্ডাতেও বেশ গরম লেগে গেছে দুজনেরই। তাই দুজনেই গায়ের জ্যাকেটগুলো খুলে নিলো। গাড়ি চলতে চলতে রোহিনীর মন্দির এর কাছাকাছি আসতেই টিটোদি বলল “চা খেয়ে নি চল একবার।” টিটোদির কথা মতো রতন গাড়িটা বাঁ দিকে ঘুরিয়ে নিল। রোহিনীর লেকের সামনের ফাঁকা জায়গাটা সত্যিই খুব সুন্দর এবং মন কেড়ে নেয়। উঁচু পাহাড়ের মাঝে এরকম একটা সমতল জায়গা থাকতে পারে সেটা এখানে না এলে বিশ্বাস করা খুব কঠিন। গাড়ি থেকে নেমে ওরা চা দোকানের দিকে গেল। দোকানের বাইরে ছাতার নিচে রাখা টেবিলে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আস্বাদন করতে থাকল নিলু।
-“একটু মোমো খেয়ে নিবি নাকি নিলু?” বেশ কিছুক্ষণ পর নীরবতা ভঙ্গ করে টিটোদি প্রশ্ন করে উঠল।
-“না আমি কিছুতেই তোমার কথা শুনবো না, তুমি প্রতিবার এই করে আমাকে রাস্তার মোমো খাইয়ে দাও! এবার আমি ভালো কোথাও খাব।” নিলু এরকমই বাচ্চাদের মতো বায়না করে থাকে সবসময় টিটোদির সাথে।
-“ঠিক আছে চল তবে শুধু চা ই খেয়ে নিই।”
চা খেতে খেতে নিলু সুন্দর রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে ছিল। কি সুন্দর এঁকে-বেঁকে রাস্তাটা কার্শিয়ং এর দিকে উঠে গেছে। চা খেতে খেতে ওরা দেখল ওখানে অনেক প্রি ওয়েডিং ভিডিও শুট চলছে। এখানে আসলে লেকটা আর লেকের উপর ব্রিজটা খুবই সুন্দর। লেকের জলে অনেক বড় বড় প্রাচীন আমলের গাছ হয়ে আছে। আর লেকের আশেপাশে বিভিন্ন রঙের সুন্দর সুন্দর কাগজ ফুলের গাছ। সে এক অবর্ণনীয় সৌন্দর্য্য।

ছবি – কুণাল

নিলু কয়েকটা লাল রঙের ফুল তুলে টিটোদিকে দিল। লাল নিলুর কাছে ভালোবাসার রঙ। কিন্তু টিটোদির কাছে ফুল মানে যে শুধু ফুলই! তা সে রোজ ডেই হোক আর ১৪ ই ফেব্রুয়ারিই হোক। টিটোদির কঠিন মনে দাগ কাটার মত ফুল মনে হয় কোনও গাছে এখনো ফোটে নি!

… চলবে …


অন্যান্য  পর্ব পড়ুন এখানে –
১) প্রথম পর্ব  https://pandulipi.net/titodi-rahasyo-01/
২) দ্বিতীয় পর্ব https://pandulipi.net/titodi-rahasyo-02/
[ www.pandulipi.net is a one of a kind web portal where readers can spend few time to read Bengali short  story / Bengali poem / Bengali travelogue / Bengali articles / Bengali series / Bengali Thriller / Bengali Detective story  etc. everything complemented with some beautiful photographs or illustrations etc. therefore not only literature www.pandulipi.net also showcases the wide arena of photography and art. Not only Bengali but  www.pandulipi.net also publishes English short  story / English poem / English travelogue / English articles / English series / English Thriller / English Detective story. Remember we have best Bengali short story and English short story in our kitty.Because we believe every story should have its own photograph as well as every photograph has a story to tell. We at www.pandulipi.net thrive to build a link between them.Viewers can read our about us segment https://pandulipi.net/about-us/ ‎ for more details.One more thing to tell that readers can also get in touch with us to get their literary or photography works get published in www.pandulipi.net to showcase their passion to the world. Contact details can be availed at https://pandulipi.net/contact-us/ ‎ ]

Author: admin_plipi