
চট্টগ্রামের চৌধুরীহাট ষ্টেশনের অদূরে পাহাড়ঘেঁষা ফতেহাবাদ গ্রামে আমার ছেলেবেলা কেটেছে। সে সময়ে আমার খেলার সাথী ছিল আমার থেকে দু’বছরের বড় আমার ছোড়দি আর গ্রামেরই আরো কয়েকজন আমাদের সমবয়সী ছেলেমেয়ে। তাদের মধ্যে আমাদের পাশের বাড়ির দুই বোনও ছিল। বড়বোন ছিল ছোড়দির বন্ধু। কথা কম বলত, বাড়িতেই বেশি সময় থাকত, মায়ের সংসারের কাজে সাহায্য করত। আর ছোটবোন বানী ছিল আমাদের সবসময়ের খেলার সাথী।
গ্রামের পাশ দিয়ে কর্ণফুলী নদী বয়ে চলেছে। অদূরেই বঙ্গোপসাগরের মোহনা। ওপারে জাহাজ সমুদ্র থেকে নদীতে ঢুকছে। এপার থেকে আমরা তা চেয়ে চেয়ে দেখতাম। সমুদ্রে স্নানের লোকজন বেশি থাকত না। আমি আর বানী কখনো কখনো ঐ সমুদ্র সৈকতে গিয়ে জলে পা ডুবিয়ে খেলা করতাম।
ছোড়দির সাথে আমি আদারে বাদারে ঘুরে বেড়াতাম। সাথে থাকত বানী। যখন ও থাকত না, অন্য লোকের গাছ থেকে আম জাম পিয়ারা চুরি করে ছোড়দি যা আমাকে দিত, আমি তা সবটা না খেয়ে আমার ভাগ থেকে বানীর জন্যে কিছু লুকিয়ে রেখে দিতাম। ভালো মন্দ কিছু খাবার ওর মা ওকে দিলেও ও তার সবটা না খেয়ে আমার জন্যে কিছুটা রেখে দিত এবং আমাকে লুকিয়ে খাওয়াত। এভাবেই দুজনের দুজনকে ভাল লেগে গিয়েছিল। বড় হচ্ছিলাম, ভাললাগা ভালবাসাতে রূপান্তরিত হচ্ছিল।
ছেলেবেলায় বাড়ি থেকে আমার পালানোর অভ্যেস ছিল। বাবার পকেট থেকে পয়সা চুরি করে এদিক ওদিক পালিয়েছি কতবার। কখনো ট্রেনে চেপে, কখনো পায়ে হেঁটে। গাছ তলায় কিম্বা কোন ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রাত কাটাতাম। চুরি করা পয়সা দিয়ে মুড়ি-মুড়কি কিনে খেতাম। মা কাঁদত, মায়ের কান্না দেখে আমার বুকাদা আমাকে খুঁজে নিয়ে এসে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিত। এমনি হয়েছে কতবার!
একটু বড়ো হতে যখন বানী কে ভাললাগা শুরু হল তখন পালাতে চাইলাম অন্য কারণে। পেটের তাগিদে, চাকরীর আশায়, ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে। সঙ্গে পয়সা ছিল না। বানীকে সে কথা বলাতে ও ওর বাবার পকেট থেকে বাইশ টাকা চুরি করে এনে আমাকে দিয়েছিল। ঐ সামান্য কটা টাকা সম্বল করে আমি চলে এসেছিলাম কলকাতায়। জাহাজে বয়লারের চাকরী নিয়ে আমি দেশ বিদেশ ঘুরে এসেছি। চাকরীর মেয়াদ শেষে আমি আশ্রমিক জীবন শুরু করেছিলাম। বানীর কথা মনে পড়ত অহরহ। দাদারা আশ্রম থেকে ফিরিয়ে এনে আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিল অত্যন্ত গরীব অসহায় অবস্থায় থাকা একটি মেয়ের সঙ্গে। তারপর সংসার, নতুন চাকরী, ছেলেমেয়ের জন্ম। হারিয়ে গেলাম বানীর কাছ থেকে।
আজও জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বানীর কথা ভীষণ মনে পড়ছে। ও কেমন আছে, বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে। এখন আমি অষ্টআশি বছরের বিপত্নীক বৃদ্ধ। বানী এখনও বেঁচে আছে তো! আজও ও বেঁচে থাকলে, ওর সাথে দেখা হলে, ওর সেদিনের সেই বাইশ টাকা ফেরত দিয়ে ওকে বলতাম, “আমি কিন্তু সেদিন তোমাকে ঠকাতে চাইনি”।
লেখা: প্রনব কুমার সেন
ছবি : দেব
ভালোলাগলো।
অচীন বন্দোপাধ্যায় এঁর অদৃশ্য জলযানের সেই ঘর পালানো ছেলেটার মত…..বেশ ভালো লাগলো।
ছবিটা অসাধারন
আমাদের ছোট বেলার কথা । আমাদের কৈশোরে আমরা আমাদের জীবনের কত চাওয়া পাওয়া এইভাবেই পরিত্যাগ করেছি। সমাজ, পরিবার বা অন্যান্য নানা কারণে। আজ সে সব মনে পড়ে গেলো। জঙ ধরা স্মৃতিতে আপনার লেখার ছোয়ায় স্মৃতির কড়ায় নাড়া পড়লো। দারুন। এই ছবিটিকে প্রথমে লেখকের ব্যক্তিগত সংগ্রহ মনে করেছিলাম, পরে চিত্রকর এর নাম দেখে বুঝলাম। গল্প ও ছবির এত সুন্দর সাদৃশ্য। অনেকক্ষন ছবি টি দেখলাম। লেখক ও চিত্রগ্রাহক দুজনকেই আমার শুভেচ্ছা।
Baro sundor. Prourottwe ese Akopote bola koishorer prem kahini. Galpo ar chobi baro manansoi. @susmita samanta er mato amaro mone hoyechilo chobiti bodh hoy lekhoker byaktigato songroho.
পুরোনো সেই দিনের কথা ভোলা কি যায় এই বাঁচিয়ে রাখা প্রেম ই তো অমর প্রেম ।ভালো লাগলো
ibtmljnrv wmffu gyzkxlh wdxv bqdmseyxxkrizmx
824496 840164Music started playing anytime I opened up this web page, so frustrating! 108423
568459 221060Exceptional post even so , I was wanting to know if you could write a litte much more on this topic? Id be quite thankful should you could elaborate slightly bit much more. Thanks! 982531
665273 395245I like this web site very a lot so much superb information . 63682
796526 411426I truly treasure your piece of function, Great post. CHECK ME OUT BY CLICKING MY NAME!!! 818144
995192 710414It can be tough to write about this subject. I believe you did an exceptional job though! Thanks for this! 470809
Like!! I blog frequently and I really thank you for your content. The article has truly peaked my interest.
3577 198010wonderful post. Neer knew this, thanks for letting me know. 620077
195931 249736Good post. I learn something a lot more challenging on different blogs everyday. It will always be stimulating to read content material from other writers and practice just a little something from their store. Id prefer to use some with the content on my weblog whether you dont mind. Natually Ill give you a link on your internet blog. Thanks for sharing. 223428