Category: Bengali Poem

      আজ পৃথিবী নবীন তবে রবির কিরণ পড়ছে এসে। দিনের শুরু উনুন দিয়ে পতিত চা- এর অংশ হয়ে। ইট ভাটার ঐ চুল্লি থেকে কাপড় কাচার ধোপার কাছে। সকল মানুষ স্বার্থ বোঝে ভুলে যায় আজ আমায় তবে। শিশু বলে নগ্ন চোখে দেখছে মানুষ চারিদিকে। দিন যে কাটে ভয়ে ভয়ে…

      কোন ‘স’ এর নীচে ‘ব’ বলতে পারাটাই প্রথম ধাপ, ভাবি বসে আজও, চাঁদা পাওয়াটা ছিল কি দারুন চাপ! এরপরেও ধেয়ে আসত আরও কত প্রশ্ন বাণ, প্রস্তুত থাকতাম সবাই রাখতে নিজ সম্মান।   হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা সংঘ কিংবা দল, বিবেক, রবি, নেতাজী নামেতেই ছিল বেশী চল, আগে…

      তোমার জন্য অপেক্ষা ক্ষনিকের হৃদস্পন্দন, খানিকটা ভয় পাওয়া আনন্দ পূর্বরাগ-অনুরাগ পর্ব আর অনেক অনেক জমানো কথা।   তোমার জন্য ডায়েরীর পৃষ্ঠার ভাঁজে রেখে দেওয়া শুকনো লাল গোলাপ একটা, অনুভবের প্রথম শিহরণে রাঙানো। যখন মনে একটু একটু দোলা লেগেছিল- তবে থেকে,   তোমারই জন্য ওগো বন্ধু- জমানো আছে…

      শেষবেলার আলো ছুঁয়ে আছে ধূসর পাতাটি, শিশির বিন্দু বুকে বিষাদের কালোছায়া যেন সে আড়াল করেছে।   আজও এক নতুন সকাল, হিমেল বাতাস বয়ে বার্তা এনেছে — আসন্ন বিষণ্ণবেলা। অসবুজ দেহভারে কী মলিন পান্ডুরতা ছুঁয়ে আছে তাকে !   বিগত দিনের স্মৃতিগুলি আজ তাকে ডাকে, বনবীথির অঙ্গনে, কাকলি…

  বহুদিন বৃষ্টি দেখি নি, তাই গলার কাছে কান্নাগুলো জমাট বাঁধে উত্তরোত্তর। অসহ‍্য অভিমানে বৃষ্টি না পড়লে আমি কাঁদতে পারি নি কখনো। জংধরা শিক বেয়ে নেমে আসে শীতকাতুরে রৌদ্র। কালচে সবুজ মনখারাপের স‍্যাঁতস‍্যাঁতানি আচারের তেলের মত মজতে মজতে একসময় শুকিয়ে খটখট করে। গুমোট গরমে আকাশে পরতে পরতে জমতে থাকা মেঘের…

অঘ্রাণের গগন তলে পবিত্র দূর্বার উপর, এক আমি অন্যটা তুমি, নিয়ে দুই বিন্দু শিশিরের কাহিনী, জানি গো জানি… চন্দন পূর্ণিমা আর সিঁদুর সূর্যের বিচ্ছুরণ মেখে তুমি আমারই রানী। নিশির ললাটে প্রতিদিনই সুন্দর হও, অধরা স্পর্শ পাই আজ‌ও তার‌ আমার সুখের বুকে, পাই… আজ‌ও অবিরত অসমাপ্ত তা। কিন্তু আজ অন্য রকম…

    ছিল না মন্দাকিনী কিম্বা অলকানন্দা। এইখানে আছে স্রোতস্বিনী, চঞ্চলমতি———-আর? ছন্দিত মধুছন্দা। কখনো ঠোঁটে, কখনো বুকে তর্জনী ওঠে ইতস্তত, কারে চায়, কারে খোঁজে চপল আঁখি——–? প্রণয় ডোরে বেঁধেছে যারে তার লাগি মুখ লজ্জাবনত। দীঘল কূলে লাজুক ডানা আমার ফসলক্ষেত, ওই পাথরে বসব দুজন নয় কি অভিপ্রেত? কূল ছাপিয়ে শীর্ণ…

      যতবার তোকে ছুঁই, আরও সবুজ হয় নিঃস্পৃহ তর্জনী। তোর শরীর জুড়ে লুকোচুরি খেলে আমার কবিতারা। যত আদর করে স্পর্শ করি তোকে তত গলে যায় আদিম হিমগিরি; উচ্ছল শব্দেরা ঢেউ খেলে স্বপ্নের গভীরে। তুই কোনো সাধারণ মেয়ে নয়, তোর শরীর ভরা শিল্পের উর্বর মাটি আর আমি বর্ষা পাওয়া…

    সিঁথেয় সিঁদুর, হাতে শাঁখা, পবিত্র বউ বেশ লাগে হাতেতে হাত,হাসির ঝলক,বিয়ে হওয়ার ঠিক আগে। বিকেলবেলা,অজানা মাঠ,বসেছিলাম চুপ করে পাশাপাশি, হালকা ছোঁয়া, ভাবলে এখন বুক ভরে। প্রথম সেদিন, বৃষ্টি এল,ভিজিয়ে দিল কাকভেজা, গাছের তলা,দুরন্ত বুক,জড়িয়ে ধরা খুব সোজা দুজন একা,জল থৈ থৈ,ঠোঁটের ছোঁয়া অমৃতস্বাদ সেদিন থেকেই, পাগল পাগল, মনটা…

    বন্ধু  আমায় মনে আছে তোর? সেই যে সেদিন প্রথম দেখা,তুই আর আমি দু’জন মিতা, স্কুলের উঠোন,বারান্দা আর ক্লাসরুমের ওই বেঞ্চগুলোতে, গল্প হতো,কথা হতো,ঝগড়া হতো, পড়াশোনাও….. দশটা তিরিশ…ঘণ্টা বাজে,এক ছুটে সব আমরা মাঠে, প্রেয়ার শেষে ক্লাসে আসা,বকম বকম পায়রা কথা… আসতে ক্লাসে রিনাদিদি,সব চুপচাপ বড্ড বেশী!! চলছে পড়া এক…

    পাড়ার চেহারা যায় নিয়ত  বদলে, নদীর পুরোনো ঘাটে  আলো নিয়নের। বট গাছ কেটে ফেলে সাত তলা মল, সাইকেলে দেখা নেই ডাক পিয়নের। পুরোনো পাড়ার খোঁজে ফিরলে কখনো, অচেনা হয়েছে আজ চেনা পথঘাট, সার সার রামধনু রঙ দিয়ে আঁকা সুখী গৃহকোণে ঠাসা ফুটবল মাঠ। পুরোনো খেলুড়ে সাথী নেই কেউ…

  যে নদীর বুকে চাঁদ তার প্রতিবিম্বের সাথে কথা বলে, সেইখানে এসে তুমি বোসো। কথা যেথা মূক, ব্যথা যেথা বধির, সেইখানে হৃদয়ের দ্বার খোলা রেখো। আবেগ যেখানে যত্নে সুরক্ষিত চিবুকে আঙ্গুল ছুঁইয়ে দেখো কম্পিত অধর জ্যোৎস্নায় উদ্ভাসিত। না বলা কত কথা, এক লহমায় বাঙ্ময় হতে চায়, নীরব ঠোঁটের ভাষায়।।  …

বই নিয়ে গড়ে ওঠা বইপাড়া। সারাদিন ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত অথচ কি উদ্দীপিত এই বইপাড়া।  ভেসে আসে কত কথা চারিদিক থেকে – এদিকে আসুন, কি চাই? কি চাই আমি? পারতাম যদি পুরো বইপাড়াটাই তো আমার চাই। আস্তে আস্তে শীতে শীতল বইপাড়া ঘুম দিয়েছে। দোকানিরা বিদায় নিয়েছে। যে দু চার জন আছেন তারাও…

    আশ্চর্য ! সম্পর্ক টা টিকেই গেল !   মেয়েটা কালো, ছেলেটা ফর্সা- মেয়েটা কেরানি, ছেলেটা অফিসার- মেয়েটা চঞ্চল, ছেলেটা শান্ত-ধীর- মেয়েটা  মধ্যবিত্ত, ছেলেটার ঘর বড়ো। কেমন করে চোখে ধরলো মেয়েকে।  প্রস্তাব এল বিয়ের।   বিয়ে হল। পালটাল কিছু কিছু , ছেলেটা  বিরক্ত, মেয়েটা ঝগড়ুটে – ছেলেটা গোছানো, মেয়েটা…

    নদীর বেগে পাগল-পারা, হব আমি সকল হারা, ধরবো নাকো তোমার খেয়ার ঘাট গুলায়। বাজব হয়ে সুর ভেলা ওই তানপুরায়।।   তখন কেবল আকাশ বয়ে, আসব আমি গন্ধ হয়ে, পড়বে মনে মনের মাঝের গান গুলায়। খেলবো আমি লুটায়ে তোমার প্রাণ ধুলায়।।   বাঁশির সুরে বাজব ঘিরে, পাগল হয়ে ফিরবে…